মেয়ে বাবুদের জন্য ইসলামিক নাম (অর্থসহ)
ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী একজন মুসলমানের নবজাতক সন্তানের ইসলামি নাম রাখা গুরুত্তপূর্ণ। কেননা নাম মানুষের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে। আমাদের ইসলাম ধর্মে নবজাতকের ইসলামি নাম রাখার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
পবিত্র কুরআন মাজিদে আল্লাহ তা’আলা বলেন; “আর তোমরা তোমাদের সন্তানদের উত্তম নাম রাখো।” (সূরা আল-আহক্বাফ, আয়াত: ১০)
সুরা আহক্বাফের এই আয়াত থেকে আমরা স্পষ্ট বুঝতে পারি যে আমাদের ধর্মে নবজাতকের ইসলামিক নাম রাখা কতোটা গুরুত্তপূর্ণ! এখানে উত্তম নাম বলতে সুন্দর, অর্থপূর্ণ ও ইসলামি আদর্শের সাথে মিলে যায় এমন নামকে বোঝানো হয়েছে।
অনেকেই চায় নাম যেন ইসলামিক হয় সেইসাথে পিতা মাতার নামের সঙ্গেও যেন মিল থাকে। আমাদের পূর্বের আর্টিকেলে ইতিমধ্যেই আমরা ছেলে বাবুদের কিছু ইসলামিক অর্থসহ নাম নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকের আর্টিকেলে আমরা নবজাতক মেয়ে বাবুর ইসলামিক নাম অর্থসহ জেনে নিবো।
আলোচ্য বিষয়
- ‘আ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘র’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘স’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ত’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ন’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘জ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ই’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘শ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ফ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ম’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘হ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ক’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ‘ব’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
- ইরানি মেয়েদের কিছু নাম
- সৌদি আরবের মেয়েদের কিছু নাম
- মিশরীয় মেয়েদের নাম
- মেয়েদের নাম রাখা বিষয়ক কিছু প্রশ্নোত্তর
- আমাদের শেষ কথা
‘আ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
আইশা – জীবন, শিখা
আমিনা – শোক্ষম, নির্ভীক
আরুশা – চিন্ময়, রৌপ্যময়ী
আফিয়া – সুস্থতা, কল্যাণ
আফরিন – স্বীকৃতি, প্রশংসা
আয়াত – সুবিবেচক, সুবোধ
আলিয়া – উচ্চ, উদাত্ত
আনিসা – সুখী, কল্যাণময়ী
আমায়া – নক্ষত্র, বোধিনী
আলভিদা – বিদায়
এই হলো কিছু মেয়েদের জন্য কিছু ইসলামিক নাম যা ‘আ’ দিয়ে শুরু হয়েছে।
‘র’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
রিফা- সম্মানিত
রাহিমা- দয়ালু, করুণাময়ী
রাইসা- নেতা, প্রধান শাসক
রাইদা- ভ্রমনকারী, পর্যটক
রামিসা- সুন্দর, আকর্ষণীয়
রোজা- উপবাস, ত্যাগ
রাবিয়া- বসন্ত, ফুলের মৌসুম
রাজিয়া- সন্তুষ্ট, পরিতুষ্ট
‘স’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম অর্থসহ
সামিয়া- উচ্চ, সম্মানিত
সায়মা- উপবাসী, ত্যাগী
সাইফা- অস্ত্র, তরবারি
সাজেদা- বিনয়ী, নম্র
সাফিয়া- পবিত্র, নির্মল
সুফিয়া- জ্ঞানী, ধার্মিক
সানিয়া- রাত
সাইরিন- সুন্দর, আকর্ষণীয়
‘ত’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
তোহা- আলো, জ্যোতি
তাইফা- দল, সম্প্রদায়
তাসমিম- সুগন্ধি, সুবাস
তানজিন- আবেশ, অনুরাগ, ভালোবাসা
তানিশা- সুন্দর, আকর্ষনীয়
তাহিরা- পবিত্র, নিষ্কলুস
তাসফিয়া- স্পষ্টতা, নির্দিষ্টতা
‘ন’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
নাদিরা- বিশেষ, বিচক্ষন
নুর- আলো, আলোকিত
নাইমা- সুখ, আনন্দ
নাওমি- সুখী, আনন্দময়ী
নাদিয়া- বহুতুলা, স্ত্রী
নিসা- নারী, মহিলা
‘জ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
জারিফা- বিশূদ্ধ, নির্মল, তীক্ষ্ণ বূদ্ধিসম্পন্ন
জাইশা- সুন্দর, মনোহর, আকর্ষণীয়
জুবাইদা- অলংকিত, সজ্জিত
জাহেরা- উজ্জ্বল, আলোকিত
জেনিফা- ফুল, সুন্দরী
জান্নাতুল- বেহেশতের অধিবাসী
‘ই’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
ইফতিয়া- পবিত্রতা, নির্মলতা
ইসরাত- জান্নাতের পথে যাত্রা
ইলমা- জ্ঞান, বিজ্ঞান, শিক্ষা
ইরফানা- বোঝাপড়া, প্রজ্ঞা
ইমরোজ- সকাল, ভোর
‘শ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
শাবানা- পবিত্র, নিষ্পাপ
শাফিনা- আরোগ্য, সুস্থ
শামসুন্নাহার- সূর্যের মতো সুন্দরী
শিফা- আরোগ্য, সুস্থতা
‘ফ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
ফাইজা- সাফল্য, অর্জন, সফলতা
ফরিদা- অনন্য, অসাধারণ, একক
ফাতিহা- প্রথম, শুরু
ফাহিমা- বোঝাপড়া, বূদ্ধিমতি
ফাহমিদা- প্রজ্ঞা, বূদ্ধিমত্তা
ফালাক- ঊর্ধাকাশ, আকাশ, দিগন্ত
ফাতেমা- বিচ্ছিন্ন, উন্মুক্ত
‘ম’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
মারিয়া- নির্মল, সুন্দরী
মরিয়ম- পবিত্র, পূন্যময়ী
মাইশা- উজ্জ্বল, আলোকিত
মাইমুনা- সুখি, সমৃদ্ধ
মাজিদা- গৌরবময়, সম্মানিত
মালিহা- সুন্দরী, আকর্ষণীয়
‘হ’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
হাজেরা- পবিত্র, পরহেজগার
হালিমা- কোমল, দয়ালু, মায়াবতী
হাফছা- পরিপুর্ন, পূর্নিমা
হাফিজা- রক্ষক, পাহাড়াদার
হুর- উজ্জ্বল সাদা কালো চোখবিশিষ্ঠ রমনী
‘ক’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
কাসফিয়া- আবিষ্কারকারী, রহস্য উন্মোচক
কায়নাত- মহাবিশ্ব, সৃষ্টি, অস্তিত্ব
কানিজ- সঙ্গিনী, সুন্দরী
কাফিয়া- যথেষ্ট, পর্যাপ্ত
কারিসমা- আকর্ষন, অত্যাশ্চর্য, ব্যক্তিত্য
‘ব’ দিয়ে মেয়েদের ইসলামিক নাম
বারাকাহ- কল্যান, সমৃদ্ধি
বদরুন্নিসা- নারীদের মধ্যে পূর্নিমা
বেগম- সম্ভ্রান্ত মহিলা, অভিজাত নারী
বেলা- সুন্দরী, আকর্ষণীয়
ইরানি মেয়েদের কিছু নাম
নিচে ইরানি মেয়েদের কিছু নাম দেয়া হলো;
ফারহানা- আনন্দিত
সোহিনা- সুন্দরী
নাজমা- তারা
পারভীন- রানী
নার্গিস -শাঁখচুড়া
রোকেয়া- আলো
তাজিন -মুকুট
সৌদি আরবের কিছু মেয়ের নাম
নিচে সৌদি আরবের মেয়েদের কিছু নাম দেওয়া হলো;
আয়শা- নিদর্শন
সারা- রাজকন্যা
হায়া- জীবন
ফাতিমা- পরিপুর্নতা
জুবায়দা- ভাগ্যবতী
লায়লা- রাতের বেলা
আলিয়া- উচ্চ, সম্মানিত
মিশরীয় কিছু মেয়ের নাম
নিচে মিশরের মেয়েদের কিছু নাম দেওয়া হলো;
আমিনা- বিশস্ত
জাহানারা- বিশ্বের রানী
জোহারা- মুক্তা
নাদিয়া- আশা
রাইহা- সুগন্ধ
আরো পড়ুনঃ
- ছেলে বাবুদের ইসলামিক নাম (অর্থসহ)
- শীতে ত্বক ও চুলের পরিচর্যা
- প্যাসিভ ইনকামের ১০টি সেরা আইডিয়া
- মহিলাদের ইনকামের ১০টি সেরা আইডিয়া
- পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পাওয়ার সেরা ১০টি উপায়
- মোবাইল দিয়ে রেজাল্ট দেখার নিয়ম
মেয়েদের নাম রাখা বিষয়ক কিছু প্রশ্নোত্তর
এখানে মেয়েদের নাম রাখা বিষয়ক কিছু প্রশ্নোত্তর সংযোজন করা হলো।
প্রশ্ন ১: মেয়ে বাচ্চাদের নাম রাখার ক্ষেত্রে কি কি বিষয় খেয়াল রাখা উচিৎ?
উত্তর: ছেলে হোক বা মেয়ে, মুসলিম বাচ্চাদের নাম রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নামটি যেন শ্রুতিমধুর, সুন্দর, অর্থবহ হয় এবং সেইসাথে যেন ইসলামি আদর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।
প্রশ্ন ২: মেয়ে বাচ্চাদের ইসলামিক নাম রাখার ক্ষেত্রে কোন ধরনের নাম বাছাই করা উচিত?
উত্তর: পূর্বেই বলেছি যেসকল নাম শ্রুতিমধুর, অর্থবহ ও ইসলামি আদর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সেসকল নাম রাখতে হবে। এছাড়া মেয়ে বাবুদের জন্য ইসলামে অবদান রয়েছে এমন মহিয়সী নারীদের নাম বাছাই করতে পারেন। যেমন: আয়েশা, খাদিজা, রাবেয়া, ফাতেমা, মরিয়ম, জুলেখা ইত্যাদি।
প্রশ্ন ৩: মেয়ে বাবুর নাম বাছাই করার জন্য কি কি উৎস থেকে সাহায্য নিতে পারি?
উত্তর: বিভিন্ন ইসলামিক পুস্তক যেমন; তাফসির, হাদিস, ইসলামি ইতিহাস ইত্যাদি থেকে সাহায্য নিতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন ইসলামিক ওয়েবসাইট এবং
অ্যাপের সাহায্য নিতে পারেন।
প্রশ্ন ৪: মেয়ে বাবুর নাম রাখার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয় এড়িয়ে যেতে হবে?
উত্তর: ছেলে হোক বা মেয়ে, নাম রাখার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে নামটি যেন একটি সুন্দর অর্থবহন করে। যেকোনো অর্থহীন বা নেতিবাচক অর্থবহন করে এরকম নাম রাখা থেকে বিরত থাকতে হবে। উদাহরণসরুপ বলতে পারি “রিয়া” হয়তো আমরা অনেকের নামই দেখেছি। তবে এই শব্দটির অর্থ হলো অহংকার, আত্মপ্রচার, প্রতারণা। যেটি নিশ্চয়ই ভালো কোনো অর্থবহন করছেনা! তাই যেকোনো নাম রাখার আগে অবশ্যই তার অর্থ জেনে নিতে হবে, যদি নামটি কোনো ভালো অর্থ বহন করে তবেই সেই নাম রাখা উচিৎ।
প্রশ্ন ৫: মেয়ে বাবুর নাম হিসাবে রিয়া রাখতে পারি কি? এটি কি ভালো অর্থ বহন করে?
উত্তর: “রিয়া” শব্দটি ভালো কোনো অর্থবহন করেনা, বরং এটি নেতিবাচক বা খারাপ অর্থ বহন করে। “রিয়া” শব্দের অর্থ হচ্ছে প্রদর্শন, আত্মপ্রচার, অহংকার, প্রতারনা। একজন রিয়াকারী ব্যক্তি আল্লাহর সন্তষ্টির পরিবর্তে মানুষকে দেখানোর জন্য আমল করে থাকে। তাই নিশ্চয়ই আমরা বুঝতে পারছি যে “রিয়া” শব্দটি একজন মুসলিম বাচ্চার নাম হিসাবে রাখা ঠিক হবেনা, কেননা এটি ইসলামি আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক।
আমাদের শেষ কথা
একজন মুসলিম বাচ্চার জন্য ইসলামি আদর্শের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন নাম রাখা উচিৎ। কেননা ইসলামি বিশ্বাস অনুযায়ী এটা মানা হয়ে থাকে যে, কোনো ব্যক্তির নাম তার ব্যক্তিত্যর পরিচায়ক এবং নাম ব্যক্তিত্বের উপর অনেকটাই প্রভাব ফেলে থাকে। পবিত্র কুরআন মাজিদে মহান আল্লাহতায়ালা শিশুদের জন্য উত্তম ও অর্থবহ নাম রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আমাদের পূর্বের আর্টিকেলে আমরা ছেলে বাবুদের কিছু ইসলামি নাম নিয়ে আলোচনা করেছি। আর আমাদের আজকের আর্টিকেলটিকে চেষ্টা করেছি মেয়ে বাবুদের নাম বিষয়ক প্রায় সকল ধরনের তথ্য দিয়ে উপস্থাপন করতে। আশা করি আর্টিকেলটি পড়ে পাঠক উপকৃত হবেন।
অর্থসহ মুসলিম ছেলেদের আধুনিক নাম
ছেলে বাবুদের জন্য ইসলামিক নাম অর্থসহ
মেয়ে বাবুদের জন্য ইসলামিক নাম (অর্থসহ)
২০২৪ সালে বাছাই করা ছেলে বাবুর ইসলামিক নাম অর্থসহ