অল্প সময়ে বোর্ড পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়ার পদ্ধতি|
সকল শিক্ষার্থী চায় তাদের পরীক্ষার ফলাফল ভালো হোক। পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে সবাই চিন্তিত থাকে। শিক্ষার্থীদের বাবা-মা, শিক্ষক তাদের ভালো ফলাফল প্রত্যাশা করেন। শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার ফলাফল ভালো করে তারা বাবা-মা, শিক্ষকের মুখে হাসি আনতে চায়। তাদের মুখে হাসি আনতে শিক্ষার্থীরা কঠোর প্ররিশ্রম করে ভালো ফলাফল করতে পারে। পরীক্ষার প্রসঙ্গ উঠলেই কম বেশি সবাই ভালো ফলাফল নিয়ে চিন্তায় পড়ে যায়।
ভালো ফলাফল নিয়ে অনেকের ঘুম আসে না।
বর্তমানে সবাই বোর্ড পরীক্ষায় এ প্লাস এর পিছনে ছুটছে। সবাই প্রত্যাশা করে বোর্ড পরীক্ষায় এ-প্লাস এর। বোর্ড পরীক্ষায় এ-প্লাস পেতে অনেকে অনেক পরিশ্রম করে যায়। কঠোর পরিশ্রমের ফলে অর্জন হয় এ+। এ+ পাওয়া সব ছাত্রছাত্রীদের সপ্ন হয়ে উটেছে। কঠোর পরিশ্রমের পর এ+ সবারই কাম্য। আজকে আমাদের আর্টিকেল এর আলোচ্য বিষয় নিম্নে দেওয়া হল :
আলোচ্য বিষয়
- অল্প পড়ে বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল
- রুটিন করে পড়া
- নোট তৈরী করে পড়া
- গ্রুপ স্টাডি করা
- লিখার মাধ্যমে ভালো ফলাফল
- ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা
- রিভাইস দেয়া
- বোর্ড পরীক্ষা বিষয়ক কিছু গুরুত্তপূর্ণ প্রশ্নোত্তর
- আমাদের শেষ কথা
অল্প পড়ে বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল :
অল্প পড়ে বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা যায় যুদি সেটা বুঝে বুঝে মনোযোগ দিয়ে পড়া হয়। না বুঝে পড়লে তা মনে থাকে না। না বুঝে পড়লে তা তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বোর্ড পরীক্ষায় এ-প্লাস পাওয়ার জন্য ভালো করে বুঝে পড়তে হবে। অল্প হলেও বুঝে পরতে হবে। না বুঝে শুধু মুখস্ত করলে হবে না। অল্প পড়বেন কিন্তু ইম্পর্ট্যান্ট টপিক গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।
ইম্পর্ট্যান্ট টপিক গুলো খুঁজে খুঁজে আন্ডারলাইন করে পড়তে পারেন। এতে বেশি পড়তে হবে না অল্প পড়ে টপিকগুলোর ধারণা পেয়ে যাবেন। নিয়মিত অল্প হলেও পড়বেন। সকালে পড়বেন, সকালে পড়লে পড়া মনে থাকে তাই অল্প পড়লেও মনে থাকবে। বোর্ড পরীক্ষায় এ-প্লাস এর টার্গেট করে পড়বেন।
রুটিন করে পড়তে হবে :
রুটিন করে পড়লে বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল এ-প্লাস ও আশা করা যায়। দৈনিক রুটিন করে পড়া ভালো। রুটিন করে পড়ার ফলে প্রতি সাবজেক্টের উপর সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেকোনো কাজে রুটিন ভালো। রুটিন এমন ভাবে তৈরি করতে হবে যেনো রুটিনে প্রতি সাবজেক্ট অন্তর্ভুক্ত থাকে।
চাইলে আপনি রুটিনে খাওয়া-দাওয়া, বিশ্রাম, খেলাধুলা এবং ঘুমানোর সময় ও অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন এতে আপনার দৈনন্দিন সময় নিয়ম অনুযায়ী চলবে। রুটিন তৈরি করে মনে রাখতে পারেন কিন্তু রুটিনটি তৈরি করে পড়ার টেবিলের সামনে রাখলে ভালো হয়। কেননা এর ফলে রুটিনে চোখ পরলে কোন বিষয় প্রথমে পড়বেন সেটা বুঝতে পারবেন। রুটিনের ফলে সময় সাশ্রয় হবে। বোর্ড পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
নোট তৈরি করে পড়া :
নোট তৈরি করে পড়লে বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল সম্ভব। ইম্পর্ট্যান্ট টপিকগুলো নোট করে পড়লে ভালো ফলাফল করা যায়। নোট তৈরী করার ফলে অল্প পড়েও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। ইম্পর্ট্যান্ট টপিক গুলো হাইলাইট করে রাখতে পারেন। খাতায় সুন্দর করে নোট করতে পারবেন। নোটগুলো আর্কষনীয় করতে বিভিন্ন রঙের কলম ব্যবহার করতে পারেন।
বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পেতে বেশি বেশি নোট করবেন। নোটগুলো পরিস্কার করে করবেন যেনো দ্বিতীয় বার পড়ে বুঝতে পড়েন। হাতের লিখা সুন্দর রাখবেন। নোট লিখার সময় তারিখ এবং টাইটেল লিখতে পারেন। শিক্ষক বা ভালো ছাত্র-ছাত্রীর কাছে থেকে ইম্পর্ট্যান্ট টপিক জেনে নোট করতে পারেন।
গ্রুপ স্টাডি করা :
গ্রুপ স্টাডি বলতে বুঝি কয়েকজন মিলে এক সাথে পড়া। বন্ধু-বান্ধবিদের সাথে গ্রুপ স্টাডি করতে পারের। গ্রুপ স্টাডির অনেক উপকার রয়েছে। কয়েকজন মিলে গ্রুপ স্টাডি করলে পড়াশোনায় আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। একা কোনো সমস্যা সমাধান করতে না পারলে তা গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে সবাই মিলে সমাধান করা যায়।
গ্রুপ স্টাডি করলে অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা যায়। আলোচনার মাধ্যমে অনেক তথ্য জানা যায়। গ্রুপ স্টাডি করে তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বৃদ্ধি পায়। গ্রুপ স্টাডির ফলে বোর্ড পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা যায়।
লিখার মাধ্যমে ভালো ফলাফল :
ভালো ফলাফল করার আরেকটি উপায় হল বেশি বেশি করে লিখা। আমরা মুখস্ত করার মাধ্যমে যতটুক না মনে রাখতে পারি তার চেয়ে বেশি লিখার মাধ্যমে পড়া মনে রাখা যায়। লিখার কারনে পড়া সহজে ভুলা হয় নাহ। যত বেশি লিখবেন মনে তত থাকবে। তাই বেশি বেশি করে লিখতে হবে। একজন ছাত্রকে প্রতিদিন একটু হলেও লিখার অভ্যাস করা উচিত।
প্রতিদিন লেখালেখির মাধ্যমে হাতের লিখা সুন্দর হয় যা ভালো মার্কস পেতে সাহায্য করে। কারন একজন শিক্ষক সর্বদা সুন্দর-মার্জিত লিখা পছন্দ করেন, তাই পরীক্ষার খাতায় সব সময় সুন্দর ও মার্জিত ভাবে লিখার চেষ্টা করা উচিত। বোর্ড পরীক্ষায় এ+ পেতে হলে একজন ছাত্রকে বেশি বেশি করে লিখার অভ্যাস গড়ে তুলা উচিত।
ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহন করা :
ভুল হওয়া স্বাভাবিক। প্রায় সবাই ভুল করে। ভুল হলে চিন্তিত না হয়ে ভুল কোথায় হয়েছে , কেনো হয়েছে সেটা ভালো করে বুঝবেন। ভুল গুলো শুদ্ধ করার চেষ্টা করবেন। ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহন করবেন। দিত্বীয়বার ভুল যেনো না হয় সে দিকে খেয়াল রাখবেন। যে টপিকে ভুল হবে সেই টপিক বেশি বেশি করে পড়বেন।
যে টপিকে বেশি ভুল হবে দরকার হয় সেই টপিক নোট করে রাখতে পারেন যাতে একই ভুল আবার না করেন। ভুল গুলো শুদ্ধ করতে পারলে পরীক্ষায় ভালো ফলাফল সম্ভব। বোর্ড পরীক্ষায় এ-প্লাস পেতে ভুল গুলো শুদ্ধ করতে হবে। বোর্ড পরীক্ষায় লিখার সময় ভুল না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। লিখা শেষ হলে পূর্নরায় তা চেক করে ভুল সংশোধন করবেন। নিজের ভুল নিয়ে শিক্ষকের সাথে আলোচনা করা উচিত। যাতে তিনি ভুল সংশোধন করে দিতে পারেন।
রিভাইস দেওয়া :
পড়ালেখা নিয়ে সব ছাত্রছাত্রী চিন্তিত থাকে। আজকের দিনের সব ছাত্রছাত্রীদের একটাই সমস্যা পড়া ভুলে যাওয়া। অনেক মনোযোগ দিয়ে পড়ার পর পরীক্ষায় গিয়ে ভুলে যাওয়োর সমস্যা সবারই রয়েছে। কিছুতেই পূর্বের পড়ার মনে আসে না। তাই পড়া মনে রাখতে সেই পড়াগুলো বার বার রিভাইস দেয়া উচিত।
বোর্ড পরীক্ষায় এ+ পাওয়ার জন্য বেশি বেশি পড়া রিভাইস দিতে হবে। বেশি বেশি পড়া রিভাইস দেওয়ার ফলে পড়া ভুলবেন না। কয়েকদিন পর পর পূর্বের পড়া রিভিশন দিলে তা ভুলার সম্ভবনা কম থাকে। বার বার রিভাইস দেয়া পড়া মনে রাখার একটি অন্যতম উপায়।
বোর্ড পরীক্ষা বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর :
- বোর্ড পরীক্ষায় এপ্লাস পেতে দিনে কয় ঘন্টা পড়তে হবে ?
উত্তর :বোর্ড পরীক্ষায় এ প্লাস পেতে বেশি বেশি পড়তে হবে। দিনে ৫ ঘন্টা পড়তে পারেন আবার রাতে আরও ৫ ঘন্টা পড়তে পারেন। এর থেকে বেশই পড়লেও ভালো হয়।
- কখন পড়লে পড়া মনে থাকে ?
উত্তর : পড়াশোনার জন্য কার্যকরী সময় হল ভোরের সময় সকাল ৪টা থেকে ৭টা পর্যন্ত। গবেষকদের মতে মস্তিষ্কের অধিগ্রহণের সময় সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা এবং বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। তাই তখন পড়তে পারেন।
- বোর্ড পরীক্ষায় কীভাবে লিখা উচিত?
উত্তর : পরীক্ষায় খাতায় লিখা সুন্দর থাকতে হবে। হাতের লিখা যেন স্পষ্ট হয় সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। যেকোনো প্রশ্নের উত্তর লিখার সময় তা খাতায় ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন করবেন। লিখা সুন্দর করতে বাসায় বেশি বেশি লিখবেন।
আমাদের শেষকথা :
পরীক্ষা নিয়ে প্রায় সকল ছাত্রছাত্রীই চিন্তিত থাকে। সবাই চায় ভালো ফলাফল করতে। সবাই চায় অল্পসময়ে এ+ পেতে। অনেকেই পরীক্ষার চিন্তায় ডিপ্রেশন এ পড়ে যায়, যা অনেক ভয়াবহ হয়ে উঠে। একজন ছাত্রের জীবনের জন্য। অনেকের পরিবার পরীক্ষায় এ+ এর জন্য তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে যার জন্য তারা হতাশায় থাকে সব সময়।
অনেক ছাত্রছাত্রী পরীক্ষার চিন্তায় অনেক ভুল সিধান্ত নিয়ে ফেলে, যা তাদের পরিবারের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। অনেক পরিবার তাদের সন্তান ও হারায়। তাই ভালোভাবে মনোযোগ দিয়ে পড়া এবং পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করা খুবই জরুরি । আমাদের আজকের আর্টিকেল ছিল কিভাবে অল্প পড়ে পরীক্ষায় এ প্লাস পাওয়া যায়। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে লাইক, শেয়ার এবং আপনার মতামত আমাদের জানাতে ভুলবেন নাহ।